Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

রোহিঙ্গা শরনার্থী কেন ?(‌‌পর্ব-১৪)‌

Why-Rohingya-refugees-Episode-14

রোহিঙ্গা শরনার্থী কেন ?(‌‌পর্ব-১৪)‌

 অজয় মজুমদার

শরণার্থী তাড়ানো অসাংবিধানিক : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বনাম টেস্ট অফ অরুণাচল প্রদেশ (১৯৯৬) মামলায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিল যে,ভারতের পৃথক শরণার্থী আইন না থাকলেও সংবিধানের মৌলিক অধিকারের ২১ ধারায় বেঁচে থাকার অধিকারবলে, শুধু ভারতীয় নাগরিক নয়, বিদেশিদেরও বেঁচে থাকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার আছে ৷ 



প্রথমত, ১৯৫১ ও ১৯৬৭ সালের শরণার্থী সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নিয়মাবলীতে ভারতের প্রত্যক্ষ দায় না থাকলেও নয়াদিল্লি অতীতে অমানবিক হয়নি ৷ দ্বিতীয়ত, ভারত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র ও পরবর্তী পর্যায়ে একদিকে মৌল রাজনৈতিক অধিকার এবং অন্যদিকে আর্থ-সামাজিক অধিকার- সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক নিয়মাবলীতে সম্মতি দিয়েছে ৷ সেই সুবাদে শরণার্থীদের অধিকার রক্ষার প্রসঙ্গেও কার্যত স্বীকৃতি পেয়েছে ৷ 


তৃতীয়ত, শরণার্থী সংক্রান্ত আইনেরও আশ্রয়প্রার্থী উদ্বাস্তুদের যে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া যায় না, সেই প্রচলিত রীতি ধীরে ধীরে এনে সুদূর আদর্শের রূপ পেয়েছে ৷ চতুর্থত, ভারতীয় সংবিধানে বিদেশিদের বেঁচে থাকার অধিকার স্বীকৃত। তাই ভারতের ভূখণ্ডে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ১৯৬৭ সালের পাসপোর্ট অ্যাক্ট বা ১৯৪৬ সালের 'ফরেনার্স অ্যাক্ট' প্রয়োগ করা বিধেয় নয়। 


মায়ানমারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায় নতুন করে আক্রান্ত। সেই সময় আগে আসা রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করা সমর্থন যোগ্য নয়। জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে বা মায়ানমারকে ঘিরে চীন– ভারত স্নায়ুযুদ্ধ আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গাদের বলি দেওয়া অথবা এই উদ্বাস্তুদের কূটনৈতিক দাবা খেলায় বোড়ে বানাতে উদ্যোগী হলে, তার ফল আখেরে কি ভালো হবে? শরণার্থীদের কিছু জাত-ধর্ম থাকে? আশ্রয় পেলেই তারা কৃতার্থ হয়।


সরকারি তথ্যনুযায়ী, ১৯৪৭ সালে শরণার্থী স্থানান্তর ঘটে সবথেকে বেশি ৷ ১৫ লক্ষ মুসলমান পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার থেকে পূর্ব পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলো ৷ কিন্তু বাংলাদেশে এই প্রথম মায়ানমার থেকে সেখানকার সৈন্যদের অত্যাচারে বাংলাদেশের চলে আসে চার লক্ষ রোহিঙ্গা ৷ বাংলাদেশের নয়াপাড়া ক্যাম্পে ১৮ হাজার শরনার্থী রয়েছে ৷

ভারতবর্ষের ইতিহাস থেকে জানা যায়– পরকে আপন করাই ভারতের বৈশিষ্ট্য ৷ সে ঠাঁই দিয়েছে অন্যকে ৷ সাইটস অফ রিফিউজি নির্মাণ করতে হয়নি ৷ এ দেশ হল বহু মানুষের আশ্রয়স্থল ৷ ইরান থেকে আসা পার্শি, জেরুজালেম থেকে ইহুদি, আর্মেনিয়াম ব্যবসায়ী, সব মানুষের জন্যই ভারতবর্ষের দ্বার ছিল উন্মুক্ত ৷ সকলেই এই ভূমিতে আশ্রয় পেয়েছে ৷ তিব্বতি মানুষজন, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে চলে এসেছেন ভারতবর্ষের নিরাপদ আশ্রয়ে ৷‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন