রোহিঙ্গারা শরনার্থী কেন ? (পর্ব-১১)
অজয় মজুমদার
রোহিঙ্গারা ভারতের জাতীয় সুরক্ষার পক্ষে বিপদজনক, ভারতের প্রশাসন এ কথা বললেও পৃথিবী জুড়ে কিন্তু সু চি–র বিরোধিতার পারদ চড়ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ভারতের নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে হলফনামা পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই হলফনামায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভারতে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলির যোগসাজশ রয়েছে, যা দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকির।
হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে অরক্ষিত সীমান্তের সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গারা ভারতে এসেছেন। দেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৪০ হাজারের কিছু বেশি। তাদের এখানে বসবাস করার বিষয়টির সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৭ পাতার হলফনামায় বিস্তারিতভাবে এই রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনের কথা বলা হয়েছে। হলফনামায় বক্তব্য– বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভারতীয় নাগরিকদের ওপর মৌলবাদী রোহিঙ্গাদের হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কূটনৈতিকভাবে নয়াদিল্লি যথেষ্ট চাপে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি এই বিষয়ে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর কড়া নজর রাখছে। ২৪ আগস্ট ২০১৭ মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হামলা এবং ১৫০ জন পুলিশ ও সেনাকে হত্যার পরে নয়াদিল্লি সরকারিভাবে সে দেশের সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে ৷
চীনের প্রস্তাবের কথা মাথায় রেখে মায়ানমারকে এ ব্যাপারে সমর্থন করা ছাড়া সাউথ ব্লকের গত্যন্তর নেই ৷ কিন্তু পাশাপাশি ভারত এটাও বুঝেছে যে এই শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মায়ানমার আদৌ রাজি নয়। ঢাকাও চাপ তৈরি করেছে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে, ভারত যেন পাশে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে বলেছেন, একটা সম্প্রদায়ের সবই জঙ্গী, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। জঙ্গী থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নিন।
আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: মোমেন মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সমর্থনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীলতার উপর জোর দেওয়ার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন।
৩১ আগস্ট ২০২১, জেনেভায় জাতি সংঘের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান। ডক্টর মোমেন মায়ানমারে অনুকূল পরিবেশে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন ৷ বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এগারো লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন