Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বনগাঁয় ‌বিচারকের মানবিক নির্দেশে শিশু কন্যাকে ফিরে পেলেন অসহায় মা

 

The-mother-got-her-minor-daughter-back

সমকালীন প্রতিবেদন :‌ আইনি পরিষেবা কমিটির হস্তক্ষেপে অবশেষে শিশু কন্যাকে ফিরে পেলেন অসহায় মা। পাশাপাশি, গৃহবধূর ওপর হওয়া অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে বাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশকে সুয়োমোটো মামলা রুজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই মানবিক নির্দেশে আপ্লুত অসহায় গৃহবধূ। বনগাঁ মহকুমার ঘটনা।

জানা গেছে, ২০১০ সালে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার ধর্মপুর এলাকার যুবতী মাম্পি বিশ্বাস রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় গাইঘাটার খরুয়া রাজাপুর এলাকার ব্যবসায়ী নারায়ন বিশ্বাসের। বর্তমানে তাঁদের চার বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মাম্পি বিশ্বাস রায়ের অভিযোগ, তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার করে তাঁর শিশুকন্যাকে আটকে রেখে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে তিনি বর্তমানে ধর্মপুর গ্রামে নিজের মামার বাড়িতে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। 

বনগাঁ মহকুমা আদালতের আইনি পরিষেবা কমিটির মেডিয়েটর তথা আইনজীবী প্রদীপ চ্যাটার্জী জানান, মাম্পি বিশ্বাস রায় নামের ওই অসহায় গৃহবধূ গত ২ আগস্ট আদালতের আইনি পরিষেবা কমিটির কাছে লিখিত আবেদন করে জানান, তাঁর চার বছরের কন্যা নিষ্ঠা বিশ্বাসকে জোর করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আটকে রেখে দিয়ে তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ওই গৃহবধূ তথা অসহায় মা যাতে তাঁর মেয়েকে ফিরে পান, তার জন্যই তিনি এই আবেদন করেন।

এই আইনি পরিষেবা কমিটির চেয়ারম্যান তথা বনগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত ১ এর বিচারক শান্তনু মুখোপাধ্যায় গোটা বিষয়টি শোনার পর মাম্পি বিশ্বাসের রায়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে বনগাঁ থানাকে একটি সুয়োমোটো মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি গত ৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার মাম্পি বিশ্বাস রায় এবং তাঁর স্বামী নারায়ন বিশ্বাসকে আইনি পরিষেবা কমিটির সামনে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। 

এদিন দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক তথা কমিটির চেয়ারম্যান শান্তনু মুখোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ছোট্ট নিষ্ঠাকে তার মায়ের হাতে তুলে দিতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী কমিটির সামনেই নিষ্ঠাকে তার মা মাম্পির হাতে তুলে দেন মাম্পির শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। মেয়েকে ফিরে পেয়ে আপ্লুত মাম্পি বিশ্বাস রায় কমিটির সামনেই আনন্দে কেঁদে ফেলেন। মেয়েকে ফিরে পেয়ে মাম্পি বিশ্বাস রায়ের প্রতিক্রিয়া, '‌আইনজীবী প্রদীপ চ্যাটার্জী এবং আইনি পরিষেবা কমিটির এই ভূমিকায় আমি তাঁদের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব। তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানানোর আমার কোনও ভাষা নেই।'

কমিটির মেডিয়েটর তথা আইনজীবী প্রদীপ চ্যাটার্জী জানান, গোটা দেশের পাশাপাশি বনগাঁ মহকুমা আদালতেও একটি আইনি পরিষেবা কমিটি রয়েছে। যেখানে অসহায় মানুষেরা, যারা ন্যায়বিচার পেতে চান অথচ মামলার ঝক্কি সামলাতে পারবেন না, তাঁরা সরাসরি আদালতে মামলা না করে বনগাঁ মহকুমা আদালতের এই আইনি পরিষেবা কমিটির প্রাক–মামলা মধ্যস্থতা কেন্দ্রে এসে আবেদন জানালে তাঁরা তাঁদের ন্যায়বিচার পেতে পারেন এবং সেটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এ ব্যাপারে তিনি এবং আইনি পরিষেবা কমিটি এই সরকারি সুযোগ নেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানান।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন