সমকালীন প্রতিবেদন : উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি, তৃণমূল নেতা জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে পোষ্টার পরল। সেখানে তাঁকে 'আইএসএফ ও বিজেপি–র দালাল', বলে সম্মোধন করে তাঁকে আক্রমন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে হাবড়ার পৃথিবা পঞ্চায়েতের আটুলিয়া এলাকায় এমন একাধিক পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনার পেছনে দলেরই একাংশের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তিনি।
দিন দুই আগেই জাকির হোসেন তাঁর ফেসবুক পেজে মন্তব্য করেন, 'হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অধীন ৭ জন অঞ্চল সভাপতিরই উচিৎ নব নিযুক্ত সভাপতিদ্বয়ের সাংগঠনিক কাজের সুবিধার্থে পদত্যাগ করা। এক এক জন অঞ্চল সভাপতি অনন্ত কাল ধরে স্বপদে থেকেও দলকে মজবুতের পরিবর্তে দুর্বল করেছেন। নৈতিক দায়িত্ব কাধে নিয়ে দায়িত্ব ছাড়ুন।যদি তারা পদ না ছাড়েন, তাহলে নতুন সভাপতিদ্বয় এর কাছে অনুরোধ, তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে সংগঠন ঢেলে সাজান। মনে রাখা দরকার, এবার বিধানসভা নির্বাচনে ৭ জন অঞ্চল সভাপতির হোম বুথেই শোচনীয় পরাজয় হয়েছে দলের।'
জাকির হোসেনের এই পোষ্টকে ঘিরে ইতিমধ্যেই হাবড়ার রাজনৈতিক মহলে, বিশেষ করে তৃণমূলের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগেও দলবিরোধী পোষ্ট করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এব্যাপারে তৃণমূলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তপতী দত্ত জানিয়েছেন, জাকির এভাবে ফেসবুকে পোস্ট না করে দলীয় বৈঠকেই তাঁর মতামত জানাতে পারতেন। আর সেটাই ভালো হতো।
এদিকে, এই ঘটনার পর শুক্রবার সকালে হাবরার পৃথিবা পঞ্চায়েতের আটুলিয়া এলাকায় স্থানীয় লোকজন দেখতে পান যে, স্কুলের দেওয়ালের পাশাপাশি আশপাশের একাধিক জায়গায় জাকিরের বিরুদ্ধে পোস্টার পরেছে। সেখানে লেখা হয়েছে, 'তৃণমূল এর মুখোশধারী ISF ও BJP দালাল জাকির হোসেন দূর হটো।' এই পোস্টার লাগানোর খবর ছড়িয়ে পরতেই গুঞ্জন শুরু হয়।
পোষ্টার লাগানোর বিষয়ে জাকির হোসেনের বক্তব্য, 'দলেরই একাংশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতে যাদের তোলা আদায়ে অসুবিধা হচ্ছে, তারাই রাতের অন্ধকারে এই কান্ড ঘটিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এমন পোষ্টার আরও লাগানো হলেও আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রাখবো। জেনে বুঝেই আমি ফেসবুকে ওই লেখা পোষ্ট করেছিলাম। আর তার কারণেই আমার বিরুদ্ধে এমন পোষ্টার লাগানো হয়েছে। আমার সঙ্গে পারিবারিকভাবেই এলাকার সব রাজনৈতিক দলের মানুষদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। যার কারণেই আমি ৬ বারের জনপ্রতিনিধি।'
যদিও তৃণমূলের এই অন্ত:কলহ তাড়িয়ে উপভোগ করছে বিজেপি। এব্যাপারে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, 'তৃণমূল নিজেদের মধ্যে এইরকম অন্তর্দ্বন্দ্ব যত চালিয়ে যাবে, তত বিজেপির লাভ। তৃণমূল দলে যে কোনও শৃঙ্খলা নেই, এই ঘটনা তারই প্রমান।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন