সমকালীন প্রতিবেদন : বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের ইস্তফা বিষয়ে দফায় দফায় বৈঠকে বসেও দলের স্থানীয় নেতৃত্ব মিমাংসায় আসতে পারল না। অবশেষে এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপর দায়িত্ব ছাড়লো স্থানীয় নেতৃত্ব। এখন তাদের সিদ্ধান্তের উপর তাকিয়ে রয়েছেন স্থানীয়রা।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে আচমকাই বনগাঁ ব্লক অফিসে গিয়ে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দেন ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনগাঁর রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পরে যায় দলের নেতৃত্ব। সেইদিনই জরুরী ভিত্তিতে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন। কিন্তু সেদিন এব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে নি নেতৃত্ব।
পরদিন পঞ্চায়েতের দলের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে ফের বৈঠকে বসে নেতৃত্ব। কিন্তু সেই বৈঠকেও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় নি। শোনা যায়, এই পরিস্থিতি চলাকালীন এই পঞ্চায়েতের দলেরই কয়েকজন সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা করার প্রস্তুতি নেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকরী হয় নি।
এদিকে, 'কাজের মানুষ, কাছের মানুষ, জনদরদী প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষের ইস্তফাপত্র বাতিল করে তাঁকে প্রধানের পদে ফিরিয়ে আনতে হবে'– এই দাবিকে সামনে রেখে ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার দিনই জয়ন্তীপুর এলাকায় যশোর রোড অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, চাপের মুখে প্রধান ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। একই দাবিতে বুধবার সন্ধেয় ফের জামতলা এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন একদল গ্রামবাসী। পরে দলীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সেই অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এদিকে, দলীয় সূত্রে খবর, প্রধানের ইস্তফা সংক্রান্ত বিষয়টির মিমাংসার পথ খুঁজতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছে দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই এব্যাপারে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরাণী সরকার। তৃণমূলের বনগাঁ শহর সভাপতি দিলীপ দাস জানান, 'প্রধানের ইস্তফা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বৈঠকে বসেও সমাধান সূত্র বের করতে ব্যর্থ হয়েছি। তাই বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপর ছেড়ে দেওযা হয়েছে। তারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই হবে।'
অন্যদিকে, এব্যাপারে প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, 'ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আমি প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। যদিও ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার সময় দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও আলোচনা করি নি। তবে বিষয়টি নিয়ে এখন যখন এতো চর্চা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, দলের সৈনিক হিসেবে তাই মাথা পেতে নেব।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন