সমকালীন প্রতিবেদন : করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন স্ত্রী। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী, গরীব দরদী সেই স্ত্রীর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁর স্বামী সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স তুলে দিলেন। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসলেও এই অ্যাম্বুলেন্স যাতে রোগীদের কাজে আসে, তারজন্যই এই উদ্যোগ বলে জানান মৃতার স্বামী।
বীরভূমের দুবরাজপুর মানসায়র হাসপাতালের নার্সিং স্টাফ ছিলেন পূরবী বন্দোপাধ্যায়। গরীব দরদী এই মানুষটি সবসময় অসহায় মানুষের কথা ভাবতেন। তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতেন। গত বছর এই মানুষটিই করোনা রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরেন। প্রথমে হোম আইসোলেশনে থাকলেও পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পূরবী দেবীকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ৪ মে ওই হাসপাতালেই তিনি মারা যান।
কর্ম জীবনে পূরবীদেবী সারাক্ষণই অসহায় মানুষদের পাশে থেকেছেন। এমন একজন মানুষ অকালে চলে যাওয়ায় তাঁর পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পরেন। পাশাপাশি, এও ভাবেন যে, তাঁর স্মৃতিতে এমন একটি কাজ করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হন। সেই ভাবনার পাশাপাশি স্ত্রীর ইচ্ছেকে সম্মান জানাতে তাঁর স্বামী, দুবরাজপুরের বাসিন্দা পেশায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সিউড়ি সদর হাসপাতালকে একটি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স দান করলেন।
জয়দীপবাবুর আশা, করোনা ছাড়াও সাধারণ সময়েও কোনও দরিদ্র, অসহায় রোগী এই অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা ভোগ করে নিজের জীবন বাঁচাতে পারবেন। জয়দীপবাবু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের এমন মানবিক ভাবনায় খুশি হাসপাতালের সুপার শোভন দে সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বুধবার এই অ্যাম্বুলেন্সের উদ্বোধন করলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। সদর হাসপাতালের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন