সমকালীন প্রতিবেদন : বীরভূমের ইলামবাজারের গোপালনগর গ্রামে গৌরব সরকার খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে ইলামবাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হঠাৎই হাজির হন সিবিআই এর তদন্তকারী অফিসারেরা। কার্যালয়ে তখন উপস্থিত তৃণমূল কর্মী বাবর শেখ ও রিজাজুল হককে জেরা করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশে এবং আদালতের নির্দেশে রাজ্যব্যাপী সক্রিয় হয়েছে সিবিআই। কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ভোট–পরবর্তী হিংসার ঘটনায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম বীরভূম। এদিন তৃণমূল কার্যালয়ে তদন্তের কাজ শেষ করে অফিসারেরা ইলামবাজার ব্লকের গত ৩ বছরের বুথ সভাপতি ও ব্লক নেতাদের ফোন নম্বর চাওয়া চান কর্মীদের কাছে।
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের গণনার দিন বীরভূমের ইলামবাজার থানার গোপালনগর গ্রামে পিটিয়ে খুন করা হয় গৌরব সরকারকে। এই খুনের ঘটনায় হুগলি থেকে ভনা মৃর্ধা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তাকে বোলপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে চার দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেন।
তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পর ইলামবাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হাজির হন সিবিআই আধিকারিকরা। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকেরা উপস্থিত হওয়ায় বীরভূমের রাজনৈতিক তরজা জমে উঠেছে।
এব্যাপারে বোলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির ও বস্ত্র শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, 'আইন আইনের পথে চলবে। তবে দলীয় কার্যালয়ে সিবিআই আধিকারিকেরা যাওয়ার আগে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে জানালে ভালো হতো। ওরা যা খুশি করছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। প্রয়োজনে আমরা সাহায্য করবো।'
অন্যদিকে, তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে বলে দাবি করে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা জানিয়েছেন, 'তদন্তের স্বার্থে সিবিআই যেটা প্রয়োজন মনে করেছে, সেটাই করেছে।' এদিকে, জেল হেফাজতে থাকা বিচারাধীন বন্দিকে জেরা করতে চেয়ে সিবিআই যে আবেদন করেছিল, সেখানে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকার সেই আবেদন মঞ্জুর করল না রামপুরহাট মহকুমা আদালত।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে মনোজ জয়শোয়াল নামে বীরভূমের নলহাটিতে এক বিজেপি কর্মী খুন হন। হাইকোর্টের নির্দেশে সেই খুনের তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। তবে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছে নলহাটি থানার পুলিশ। সেই দুই অভিযুক্ত জেল হেফাজতে রয়েছে। তাদের জেরা করার জন্যই অনুমতি চেয়ে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে আবেদন করেছিল সিবিআই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন