সমকালীন প্রতিবেদন : প্রচলিত প্রথা ভেঙে এবার দক্ষিণ কলকাতার ৬৬ পল্লির পুজোয় মা দুর্গার আরাধনা করতে চলেছেন চার মহিলা পুরোহিত। নন্দিনী ভৌমিকের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি' সিনেমায় যেভাবে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মহিলা পুরোহিত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শবরী, এবার বাস্তবের নন্দিনী আরও একবার প্রথা ভাঙতে চলেছেন।
মায়ের হাতে মায়ের আহ্বান, এই থিমকে মূলমন্ত্র করেই এবারের পুজোয় অভিনবত্ব আনছে ৬৬ পল্লি। বলা যেতে পারে, কার্যত কলকাতার বুকে ইতিহাস গড়তে চলেছে তারা। সমাজের লিঙ্গ বৈষম্যের বেড়াজাল ভাঙতে এ এক অনন্য পদক্ষেপ। পৌরোহিত্য করা যে শুধু পুরুষদেরই কাজ নয়, তা বুঝিয়ে দিতেই এই উদ্যোগ। এবার ওই ক্লাবের পুজোয় মাতৃ বন্দনায় শামিল হবেন মহিলা পুরোহিত নন্দিনী ভৌমিক এবং তাঁর তিন সঙ্গী রুমা রায়, সেমন্তি বন্দ্যোপাধ্যায় ও পৌলমী চক্রবর্তী।
এই পুরোহিত দলের প্রধান নন্দিনীদেবী কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী। বর্তমানে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক। শহরের পরিচিত মুখ। প্রচলিত আগল ভেঙে বহু ধর্মীয় অনুষ্ঠানেই তিনি পৌরোহিত্য করেছেন। নন্দিনীদেবী জানিয়েছেন, বৈষম্যহীন পুজো খুব জরুরি। সাধারণভাবে যে নিয়মে দুর্গাপুজো হয়ে থাকে, সেটাই হবে। তবে আমাদের একটা ঘরানা আছে। সেই রীতি অনুসরণ করে, গান গেয়ে পুজো করব আমরা।
তাঁর কথায়, 'এতদিন আমরা বিয়ে, গৃহপ্রবেশ, অন্নপ্রাশনের মতো অনুষ্ঠানে পুরোহিতের কাজ করেছি। কিন্তু মূর্তি পুজো কখনও করিনি। গত বছর পুজোর পরই আমাদের কাছে এই পুজোর ব্যাপারে প্রস্তাব আসে। আমরাও রাজি হয়ে যাই। তার পর থেকে অনেক পড়াশোনাও করছি।'
এদিকে, মহিলা পুরোহিতদের দুর্গাপুজো দেখতে এখন থেকেই শহর কলকাতাবাসী যথেষ্টই উৎসাহিত। পুজো কর্তারা জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, প্যান্ডেল, প্রতিমা দেখার চেয়ে মহিলা পুরোহিতদের পুজো করা দেখতে তাঁরা অনেক বেশি আগ্রহী। পুজো কর্তাদের কথায়, নারীর প্রতি সম্মান জানাতেই তাঁদের এই উদ্যোগ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন