সমকালীন প্রতিবেদন : অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং কোনওরকম সরকারি বিধি না মেনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বেশ কিছু দুধ প্রক্রিয়াকরণ এবং শীতলীকরণ কেন্দ্র চলছে। এমনই গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার জেলার একাধিক দুধ প্রক্রিয়াকরণ শীতলীকরণ কেন্দ্রে হানা দিলেন সরকারি আধিকারিকেরা। সেখানকার ব্যবস্থাপনা দেখে যথেষ্ট বিরক্ত তাঁরা। সেখান থেকে দুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। দুধের মতো এমন একটি অতি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যসামগ্রীর কারখানায় এমন অনিয়মের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গাইঘাটার রামপুর এলাকায় ঘোষ ডেয়ারী নামে একটি দুধ প্রক্রিয়াকরণ এবং শীতলীকরণ কেন্দ্রে অভিযান চালান জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর এবং জেলা এনফোর্সমেন্ট দপ্তরের আধিকারিকেরা। সেখানকার ব্যবস্থা দেখে তাজ্জব হয়ে যান তাঁরা। এই ধরনের একটি ইউনিট চালাতে গেলে যে যে ধরনের ব্যবস্থা থাকা দরকার, তার অধিকাংশই মানা হচ্ছে না বলে আধিকারিকদের দাবি।
এদিন তাঁরা এই কেন্দ্রে গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি, দুধের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় সরকারি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত গাফিলতি শুধরে নেওয়ার কথাও জানিয়ে কারখানার মালিককে নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাইঘাটার পাশাপাশি এদিন আধিকারিকেরা গাইঘাটার কুলপুকুর এলাকার আরও একটি এমন কেন্দ্রে যান। তবে লকডাইনের কারণে সেখানে সেবাবে কাজ হচ্ছে না বলে তাঁরা জানতে পারেন।
এদিন রামপুর এলাকার ঘোষ ডেয়ারী নামে এই কেন্দ্রে অভিযান চালানোর পর জেলা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ মান্না জানান, দুধের মতো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণের জন্য যে যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তার অধিকাংশই এখানে মানা হচ্ছে না। যারা এখানে কাজ করছেন, তাদের নির্দিষ্ট পোয়াক পরে হাতে গ্লাভস পরে কাজ করার কথা। তা করা হচ্ছে না। দুধ প্রক্রিয়াকরণের জন্য যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা মেন চলা উচিৎ, তা এখানে মানা হচ্ছে না। দুধ সংরক্ষণের যে ট্যাঙ্ক, তার চারিদিকে আরশোলা, মাকড়সার বাসা রয়েছে। সর্বপরি, এখানে কোনও শিক্ষিত কেমিষ্ট নেই।
এতো অনিয়মের মধ্যে দিয়ে এই কেন্দ্রটি চলায় ক্ষুব্ধ সরকারি আধিকারিকেরা। তাঁরা কারখানার মালিককে সতর্ক করার পাশাপাশি দুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছেন। সেখানে খারাপ কিছু রিপোর্ট এলে এই কারখানার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।
যদিও আধিকারিকদের এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে কারখানার মালিক বাসুদেব ঘোষ পাল্টা দাবি করেছেন, 'এখানে সবকিছু নিয়ম মেনে চলছে। রাজ্যের কোথাও এমন নিয়মবিধি মেনে দুধের কারখানা চালানো হয় না। আর যে সামান্য কমিশনে কারখানা চালাতে হয়, তাতে কেমিষ্ট রাখা সম্ভব নয়।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন