সমকালীন প্রতিবেদন : দীর্ঘ অসুস্থতার পর অবশেষে জীবনযুদ্ধে হার মানলেন প্রথিতযশা সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। রবিবার বেশি রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তাঁর মৃত্যুতে সাহিত্যজগতে গভীর শোকের ছায়া নেমেছে।
এ বছরের এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বুদ্ধদেববাবু। ৩৩ দিন ধরে তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হন তিনি। মূত্রথলি এবং শ্বাসনালীতে সংক্রমণ শুরু হওয়ায় গত আগস্ট মাসের শুরুতে তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁকে দেখভালের জন্য চিকিৎসক বোর্ডও গঠন করা হয়। কিন্তু চিকিৎসায় সেভাবে সারা দিচ্ছিলেন না। জটিলতা দিন দিন বাড়তে থাকায় এক সময় তাঁকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে দিতে হয়। রবিবার রাত ১১ টা ২৫ মিনিট নাগাদ সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
১৯৩৬ সালের ২৯ জুন কলকাতা শহরেই জন্মগ্রহণ। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত বুদ্ধদেবের কলকাতার স্কুল এবং কলেজেই পঠন পাঠন। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের এই কৃতী প্রাক্তনী পরবর্তীতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। পাশাপাশি, শুরু হয় তাঁর সাহিত্য জীবন। তাঁর সাহিত্য রচনায় মূলত জঙ্গলের কথাই বেশি করে উঠে এসেছে। সঙ্গীতপ্রিয় এই মানুষটি সুরেলা কন্ঠেরও অধিকারী ছিলেন।
'জঙ্গলমহল' নামে তাঁর প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। 'হলুদ বসন্ত' উপন্যাসের জন্য ১৯৭৬ সালে তিনি আনন্দ পুরস্কার পান। পাশাপাশি, শরৎ পুরস্কার, শিরোমণি পুরস্কারেও সম্মানিত হন তিনি। তাঁর রচিত 'চান ঘরে গান', 'বাতিঘর', 'বাবলি', 'কোজাগর', 'একটু উষ্ণতার জন্য', 'মাধুকরী' ইত্যাদি উপন্যাসগুলি পাঠকদের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত। সাহিত্য সৃষ্টির পাশাপাশি তিনি বেড়াতে, শিকার করতে ভালোবাসতেন। ভ্রমণ করেছেন বহু দেশ-বিদেশে। তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলা সাহিত্য অনুরাগীরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন