সমকালীন প্রতিবেদন : গতি বাড়াচ্ছে রেল। মাত্র ১২ ঘণ্টায় হাওড়া থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে দিল্লি। রাত আটটায় হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়বে ট্রেন। পরদিন সকাল ঠিক আটটায় তা পৌঁছে যাবে দেশের রাজধানীতে। বর্তমানে হাওড়া থেকে দিল্লি দ্রুতগতির ট্রেনে সময় লাগে কমপক্ষে ১৭ ঘণ্টা। তা আরও পাঁচঘণ্টা কমানোর চেষ্টা চলছে। গতিমান এক্সপ্রেসের হাত ধরেই চালু হবে এই পরিষেবা। হাওড়া–দিল্লি হাইস্পিড করিডর তৈরির কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রেল। এবার তা বাস্তবায়িত করতে কাজ শুরু হয়ে গেল।
জানা গেছে, পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশন ইতিমধ্যেই দ্রুতগতির ট্রেন চালানোর জন্য করিডর তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে রেললাইনের ওভারহেডের কাজ হবে। হাওড়া থেকে বর্ধমান পর্যন্ত তারের এক্সটেনশনের কাজ চলছে। ১৬০ কিমি গতিবেগে ছুটতে যাতে ট্রেনে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ সুনিশ্চিত থাকে, তারই কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'মিশন রফতার'।
হাওড়া থেকে নয়াদিল্লির দূরত্ব ১৫০০ কিমি। এর মধ্যে পূর্ব রেল ২৬০ কিমি যাত্রাপথের কাজ করবে। হাওড়া ডিভিশন কাজ করবে ১১০ কিমি পথে। পূর্ব রেল ছাড়াও নর্থ সেন্ট্রাল, নর্দান সহ বেশ কয়েকটি জোন পড়ছে এই রুটে। একইভাবে তাদেরকেও কাজ করতে হবে দ্রুতগতির ট্রেন চালানোর জন্য।
শুধু দিল্লি নয়, হাওড়া থেকে মুম্বইয়ে ট্রেনযাত্রার সময় কমতে চলেছে। ২৫ ঘণ্টার জার্নিকে অনেকটাই কমিয়ে ট্রেনে হাওড়া থেকে মুম্বই পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আর সেজন্যই ট্রেনের গতি বাড়াচ্ছে রেল।
২০২৪ সালের মধ্যে দ্রুতগতির এই ট্রেন পরিষেবা চালু হয়ে যাবে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে। দ্রুতগতির ট্রেন পরিষেবা চালু হলে একদিকে যেমন যাত্রীদের ধকল কমবে, তেমনই সময়ও বাঁচবে অনেকটা।
দিল্লি থেকে হাওড়া ও মুম্বই, এই দু'টি রুটে রাজধানী ও শতাব্দী এক্সপ্রেসের ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতি ১৩০ কিমি। তবে রাজধানীর গড় গতিবেগ ৮৭ কিমি। এ রাজ্যের উপর দিয়ে রাজধানী এক্সপ্রেস সাধারণত ১০০ কিমি গতিবেগেই চলে।
রেল সূত্রের খবর, সেই গতি বাড়িয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ কিমি করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। তবে এর জন্য রেললাইনের কিছু পরিবর্তন করতে হবে। বাড়ানো হবে লেভেল ক্রসিংয়ের সংখ্যা। দুর্ঘটনা রুখতে বিশেষ জায়গাগুলিতে লাইনের পাশে ফেন্সিং দেওয়া হবে। উন্নত করা হবে সিগন্যালিং ব্যবস্থা। আর এসব কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে খরচ ধরা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।
শুধু ট্রেনের গতি বাড়ানোই নয়, যাত্রীদের নিরাপত্তার দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে রেলের তরফে। যাত্রী নিরাপত্তায় দ্রুতগতির ট্রেনে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। ট্র্যাক পরিদর্শনের জন্য রাখা হবে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি এবং ক্যামেরা। ট্রেনের গতি বাড়াতে প্রাথমিকভাবে ভারতীয় রেল প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। সিগন্যালিং ও টেলিকমের কাজের জন্য খরচ করা হবে প্রায় দু'হাজার কোটি টাকা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন