সমকালীন প্রতিবেদন : 'দলেরই কতিপয় স্বার্থান্বেষী নেতারা আমার বিরুদ্ধে বিশ্বজিৎ দাস কে ভুল বুঝিয়ে প্রভাবিত করেছিল। চেষ্টা হয়েছিল, আমার আর বিশ্বজিৎ দাসের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট করার। কিন্তু তারা তাদের উদ্দেশ্যে সফল হয়নি। আমাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক আগেও যেমন মধুর ছিল, বর্তমানেও আছে, আগামী দিনেও থাকবে। হৃদয় থেকে বলছি, তিনি দলে ফিরেছেন। এতে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ খুশি। পুরনো সঙ্গীকে ফিরে পেয়ে আমি আবেগাপ্লুত। আশা করছি, তাঁর নেতৃত্বে আগামী দিনে বনগাঁ মহকুমায় তৃণমূল দল আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে।' মঙ্গলবার দুপুরে বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের পরেই এদিন সন্ধেয় বনগাঁর ১ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে এমন প্রতিক্রিয়া জানালেন বনগাঁ শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি শংকর আঢ্য।
এদিন শংকরবাবু বলেন, 'ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। পরিবারের মধ্যেও ভুল বোঝাবুঝি হয়। কিন্তু বিশ্বজিৎ দাসের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে কোনওদিন তিক্ততা তৈরি হয়নি। তিনি একজন দক্ষ সংগঠক। বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করে উঠে আসা নেতা। তাঁর সঙ্গে সেই লড়াইয়ে সামিল হয়ে রাতের পর রাত বাইরে কাটিয়েছি। ২০১১ সালে প্রায় ৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে তাকে জিতিয়ে বিধায়ক বানিয়েছি। ২০১৬ সালে ১১ হাজার ভোটে তাঁকে ফের জিতিয়ে বিধায়ক বানিয়েছি। এটা আমাদের কাছে গর্বের।'
শঙ্কর বলেন, 'বনগাঁর বিধায়ক হয়েও তিনি কোনদিনই বনগাঁ পুরসভার ব্যাপারে মাথা গলাতেন না। তিনি বলতেন, বনগাঁ পুরসভা এবং বনগাঁ শহরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন শংকর আঢ্য। তাঁর সময়কালেই বনগাঁ পুরসভার প্রথম মহিলা পুরপ্রধান হন জ্যোৎস্না আঢ্য। তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমার পরিবারের এক মধুর সম্পর্ক এখনও অটুট রয়েছে। মাঝে দলের কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের কারণে এই ব্যক্তি সম্পর্কে সামান্য ছেদ ঘটেছিল। বিভিন্নভাবে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছিল যে, আমরা একে অপরের শত্রু। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। হয়তো আমার কোনও কাজে বা অন্য কোনও কারণে তাঁর মনে কষ্ট হয়েছিল। এ ব্যাপারেও পেছন থেকে কলকাঠি নাড়িয়েছিল দলে এখন বড় জায়গায় রয়েছেন, এমন ব্যক্তি। বিশ্বজিৎ দাস ফিরে আসায় তাদের চেহারাতে বদল ঘটতে দেখা যাবে। তারা এখন চিন্তায় পড়েছেন। জিভ কামড়াচ্ছেন। একসময় পুর বোর্ডের ব্যাপারে বিশ্বজিৎ দাসের বাড়িতে কি কি রফার চেষ্টা হয়েছিল, তা আমরা ৩—৪ জন জানি।'
শংকর আঢ্য বলেন, 'আমি যখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম, তখন দলের অনেকেই আমার খোঁজ না নিলেও বিশ্বজিৎ দাস ফোন করে আমি কেমন আছি তার খোঁজ নিয়েছেন। আমার মাও যখন করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তখন আমার স্ত্রীর কাছে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। এমনই আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক। তাই পুরনো সঙ্গীকে ফিরে পেয়ে আমি আপ্লুত। তাঁর নেতৃত্বে আমরা মিলিতভাবে দলের শ্রীবৃদ্ধি ঘটাবো।'
এদিন তিনি আরও বলেন, 'বিশ্বজিৎ দাসকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ায় অভিষেক ব্যানার্জিকে অনেক ধন্যবাদ। তিনি দলে যোগদান করার পর আজও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী দিনে তাঁর নেতৃত্বে বনগাঁ মহকুমায় হারানো ৪ টি আসন আমরা উদ্ধার করতে পারব। তাঁর নেতৃত্বে দলের আরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। আর তাতেই দলের কারও কারও কপালে এখন থেকেই চিন্তার ভাঁজ পড়ে গেছে।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন