জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বনগাঁ কংগ্রেস
(তৃতীয় পর্ব)
সুনীলকুমার রায়
১৯২৬ সালে বিজয়বাবু বনগাঁয় আসেন। তখন তিনি বর্তমান চাকদহ রোডস্থ নিবাসী ননীগোপাল চ্যাটার্জির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের অনুমতিতে বনগাঁ কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করেন।
সেই সময় বনগাঁয় একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল। রাজনৈতিক কারণে সুভাষচন্দ্র বসু বনগাঁয় এসে ননী বাবুর বাড়িতে ওঠেন। তখনও সুভাষচন্দ্র বসু নেতাজি হননি, চ্যাটার্জি পরিবারের খদ্দর পরতেন। সুভাষচন্দ্র আসেন সকাল ১১ টায়। ননী বাবুর বাড়ি সামান্য জলযোগ করে খেলাঘর মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন ঠিক হয়। কিন্তু পুলিশের অত্যাচারের ভয়ে সমাবেশে কেউ আসতে চাননি, এমনকি চেয়ার-টেবিল দিতে অস্বীকার করে। তখন অশ্বিনী কর এগিয়ে আসেন। তিনি খুব ভালো লাঠিয়াল ও ইংরেজ বিদ্বেষী ছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তখন লাঠিখেলার প্রশিক্ষণ হতো খুব গোপনে।
অশ্বিনীবাবু স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে কিছু চেয়ার ও টেবিলের ব্যবস্থা করেন। সভায় প্রায় দেড়'শ জন উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে ননীবাবুর জ্যেষ্ঠপুত্র গোপাল (কালো) চট্টোপাধ্যায় এক বড় গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে বরণ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সুরেশ চক্রবর্তী। তিনি এআইসিসি–র সদস্য ছিলেন ।
এই সভার ঠিক দু'দিন পরে লিবারসন নামে এক পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে ননীবাবুর গাড়িতে ব্যাপক তল্লাশি, ভাঙচুর করা হয়। ননীবাবুর একটি দোনলা বন্দুক ছিল, সেটি নিয়ে যায়।
এর পরেও ১৯৩৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটু বেশি রাতে দলীয় কাজে সুভাষচন্দ্র বসু বনগাঁয় এসেছিলেন। কিন্তু তখন তিনি কংগ্রেস করতেন না।
তখন ননীবাবুর বাড়ি কংগ্রেস দলের হয়ে কাজ করবার জন্য পাটশিমুলিয়ার তারকনাথ ব্যানার্জি, চৌগাছার হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ, বৈরামপুরের ইন্দ্রনারায়ন সেনগুপ্ত সহ অনেকেই আসতেন।..... (চলবে)
-----------------------------------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন