জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বনগাঁ কংগ্রেস
(ষষ্ঠ পর্ব)
সুনীলকুমার রায়
বনগাঁ শহর কংগ্রেস কার্যালয়ের সামান্য পরিচয় দেওয়া যায়। এই ভবনটি বনগ্রামের হেরিটেজ ভবন। বাড়িটির মালিক ছিলেন মন্মথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জাতীয়তাবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত একজন সৈনিক ছিলেন। তাঁর সব থেকে বড় পরিচয়, তিনি একজন সাহিত্য অনুরাগী, সাহিত্যিক এবং দক্ষ সংগঠক ছিলেন। এই ভবনের সামনে একটি লিচু গাছ ছিল। এই লিচু গাছের নিচে সাহিত্য সভা বসতো। পেশাগতভাবে মন্মথবাবু ছিলেন আইনজীবী। এই সাহিত্য সভায় তৎকালীন প্রায় সব সাহিত্যিকদের পদধুলিতে অলংকৃত হয়েছে।
১৯৩৮ সালে এখানে অমর সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসেছিলেন। তাঁর দ্বিতীয় বিবাহের অনুষ্ঠান এখানে হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ মিত্র, খগেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সজনীকান্ত দাস, মন্মথ ঘোষ, গজেন্দ্রনাথ মিত্র, নলিনীকান্ত সরকার, বিষ্ণুপদ মন্ডল সহ অনেক বিদগ্ধ মানুষ। তাঁদের উপস্থিতির কারনে এই ভবনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। এখানে তারাশঙ্করও এসেছিলেন।
সাহিত্য সভা ছাড়াও এখানে জাতীয়তাবাদী আলোচনা হতো। পরবর্তীতে এটি কংগ্রেস কার্যালয় হলে ভারতের প্রথম শ্রেণীর সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পদধুলিতে এই ভবনটি উজ্জ্বল হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, জ্যোতি বসু, ডাঃ জীবন রতন ধর সহ বর্তমান সময়ে ভূপেন্দ্রনাথ শেঠ, পরিতোষ নাথ সহ একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তি মন্ডলী।
আমলাপাড়াতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীর চর্চা কেন্দ্র, লাঠি চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। পূর্ণ সরকারের বাড়িতে এই অনুশীলন কেন্দ্রে অন্যান্যদের মধ্যে থাকতেন সন্তু মুখার্জি, গোপাল (কালো) চ্যাটার্জী, বীরু চ্যাটার্জী, ননীগোপাল ঘোষ, অশ্বিনী কর প্রমুখেরা।
এছাড়াও সিন্দ্রানীর সুশীল অধিকারী, কলাধরপুরের প্রভাস বিশ্বাস, মহেশপুরের বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য্য, গাঁড়াপোতার শান্তি উকিল, সুন্দরপুরের জিতেন মিত্র, গোবরাপুরের হৃষিকেশ মুখার্জী, পাল্লার কালিপদ চক্রবর্তী, ঘাটপাতিলার আলীকদর সাহেব কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিভিন্ন আন্দোলনে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। ..... (চলবে)
------------------------
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন