লক্ষ্মণ সাঁতরা : করোনাকালে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষককুল। গতবছর করোনার সূচনার সময় তিল ও পাট লোপাট হয়েছিল। অফসিজনের ধানেও হয়েছিল ক্ষতি। সেই ক্ষতি পূরণ করে, চাষীরা ঘুরে দাঁড়াবার জন্য চড়া দামে (কেজি প্রতি ৯০–১০০টাকা) পাঞ্জাবের আলু বীজ কিনে চাষ করেছিলেন। সেই আলু তিনমাস পরে মাঠ থেকে যারা বিক্রি করেছিলেন, তাঁরা ৭ থেকে ৮ টাকা কেজি প্রতি দাম পেয়েছিলেন। অর্থাৎ তখন বিঘা প্রতি ২০০০–২৫০০ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এবছরও ইয়াস এর তান্ডবে তিল পরিপক্ক হওয়ার আগেই গাছ মারা যায়। পাটও নষ্ট হয়। তারপর অফসিজনের ধান ভালোভাবে খামারে উঠলেও, বিক্রির সময় দাম নেই। প্রতি বস্তার (৬০ কেজি) দাম ৮০০ টাকা। বীজ ধানের মূল্য কেজি প্রতি ৯০–১০০ টাকা। বিক্রির সময় তার দাম ১৩ টাকা ৩৫ পয়সা।
বর্তমানে হিমঘরে আলুর যা দাম (২৫০–২৮০), তাতে ক্ষতির পরিমাণ মাঠ থেকে বিক্রির তুলনায় আরও অনেক বেড়েছে। তবে তাতেও শেষ রক্ষা হবে না। কারন এখনও ৭০% আলু হিমঘরে মজুত আছে। অথচ হাতে সময় মাত্র চারমাস।
তার মধ্যে সমস্ত আলু শেষ হবে না, তাই নিলাম অবধারিত। সুতরাং শেষ পর্যন্ত কি হবে বলা মুশকিল।যে সমস্ত কৃষক ভেন্ডি, বরবটি, পটল সহ নানা ধরনের সবজি চাষ করেছেন, লক ডাউন–বাজার বন্ধ, এসবের ফলে তাঁরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
চারিদিকে শুধু গেল গেল রব। শহরের বিশিষ্টজনেরা, ব্যবসাদাররা ক্ষতির সম্মুখীন। এইসব ফলাও করে প্রকাশিত হচ্ছে প্রতিদিনই। অথচ কৃষককুল ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে, কি নিদারুণ কষ্টে দিনপাত করছেন, তার খবর কেউ রাখে না। যে আলু, যে ধান চাষ করে চাষী লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না। তা থেকে বার করে এনে চাষীদের বিকল্প চাষের পথ দেখানো উচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন