সৌদীপ ভট্টাচার্য : নিয়োগের দাবিতে ফের পথে নামলেন চাকরি প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার বারাসতে জেলা প্রথমিক শিক্ষা সংসদের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের চাকরি প্রার্থীরা। গত ১২ বছর ধরে নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে অঝোরে কেঁদেই ফেললেন এক চাকরি প্রার্থী।
এদিন দুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদরে দপ্তরের সামনে হাজির হন ২০০৯ সালের প্রাথমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থী এবং ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। রাজীব বিশ্বাস নামে ২০০৯ সালের এক চাকরিপ্রার্থী এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাঁদের দুর্দশার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে অঝোরে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, 'গত ১২ বছর ধরে অমানসিক যন্ত্রনার মধ্যে দিয়ে আমরা দিন কাটাচ্ছি। সমস্তরকম যোগ্যতামানের গন্ডি পার করার পরেও নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায় করার জন্য আমাদের ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত যেতে হয়। সেখানেও আমরা জয়ী হয়েছি।'
তাঁরা আরও জানান, 'অনেক সংগ্রামের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ঘোষনা অনুযায়ী গত ১০ মার্চ যোগ্য প্রার্থীদের একটি তালিকা প্রকাশ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। তারপর কেটে গেছে আরও কয়েকটি মাস। তারমধ্যে ২০১৪ সালের পরীক্ষার্থীদের একাধিকবার চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হলেও ২০০৯ সালের প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে না।'
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তাঁদের কাতর প্রশ্ন, 'আমরা কি অন্যায় করেছি যে, আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রাখা হয়েছে ? আর কতোদিন এভাবে আমাদের অপেক্ষ করতে হবে ?' তাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, 'ইতিমধ্যেই জীবনের মূল্যবান ১২ টা বছর পার হয়ে গেছে। আর অপেক্ষা করিয়ে না রেখে দ্রুততার সঙ্গে আমাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হোক।'
এর পাশাপাশি এদিন ২০১৪ সালের প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরাও আন্দোলনে সামিল হয়। এদিন শোলার থালা হাতে নিয়ে তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে ঘোষনা করেছিলেন যে,টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের মধ্যেও থেকে কুড়ি হাজার নিয়োগ করা হবে। সেখানে এপর্যন্ত ১২ হাজার ৬০০ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বাকি পড়ে থাকা পদগুলিতে যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের জন্য এদিন তাঁরা দাবি জানান।তাঁদের আরও দাবি, প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডি.এলএড প্রশিক্ষিত প্রার্থীদেরকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। এই সমস্ত প্রার্থীদের অনেকেরই বয়স প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি চলে গিয়েছে। তাঁরা আর অন্য কোনও চাকরির পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন না। তাই এই প্রার্থীদের যেন কোনওভাবেই বঞ্চিত করা না হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন