সমকালীন প্রতিবেদন : প্রবল বৃষ্টির জেরে শুক্রবার সকাল থেকেই জল ছাড়তে শুরু করেছে দুর্গাপুর ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। এদিন সকালে ৫০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। আজও দক্ষিণবঙ্গের জেলগুলিতে বিশেষ করে পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে বৃষ্টি হলে আরও জল ছাড়া হবে বলে জানানো হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের তরফে।
একদিকে বৃষ্টিতে জল থইথই অবস্থা। তার উপর দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে টানা জল ছাড়া হলে বহু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এনিয়েই নতুন করে বাড়ছে উদ্বেগ। বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় ডুবে গিয়েছে রেললাইন। জল ঢুকে গিয়েছে কারশেডে। ফলে বহু লোকাল ও দুরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার বদল করা হয়েছে ট্রেনের সময়সূচি। সূত্রের খবর, পূর্বা এক্সপ্রেস, লালকুঁয়া এক্সপ্রেস, হুল এক্সপ্রেস ও হাওড়া-ভাগলপুর এক্সপ্রেস বাতিল করা হচ্ছে। সময় পিছিয়েছে হিমগিরি এক্সপ্রেস, দুন এক্সপ্রেস, হাওড়া-নয়াদিল্লি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের। হাওড়া-ব্যান্ডেল, হাওড়া-আরামবাগ ও হাওড়া-শ্যাওড়াফুলি রুটের অনেক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার বেশিরভাগ এলাকা জলের তলায় চলে যায়। সারা রাতেও বহু জায়গায় জল নামেনি। উত্তর কলকাতায় জলছবি সবচেয়ে খারাপ। উল্টোডাঙা, পাতিপুকুর, দমদম আন্ডাসপাসে এখনও জল জমে রয়েছে। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও আবার কোমর পর্যন্ত।
লেকটাউন থেকে শ্যামবাজার যাওয়ার পথে পাতিপুকুর আন্ডারপাসে আটকে পড়ে ৪৭ বি রুটের বাস। বাসের প্রায় অর্ধেকটা ডুবে যায়। ভয়ে বাস থেকে কোনওমতে নেমে পড়েন যাত্রীরা। কাঁকুরগাছি এলাকাতেও ব্যাপক জল যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে পথচারীদের। রাস্তা দিয়ে হাঁটা নয়, যেন সাঁতার কাটতে হচ্ছে, বলছেন তাঁরা।
এদিন সকালে রাস্তায় বেরিয়ে অফিস যাত্রীদের রীতিমতো দুর্ভোগে পড়তে হয়। বিটি রোডের উপর দিয়ে এখনও জল বইছে। সেই জল ভেঙেই যাতায়াত করছে বাস, গাড়ি। তবে শহরের গতি কমে গিয়েছে অনেকটাই। যানজটও হচ্ছে। সবমিলিয়ে সকাল থেকেই নাস্তানাবুদ আমজনতা। জমা জলে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে শহরে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। দূর্যোগের শহরে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, এখন নিম্নচাপ অক্ষরেখার অভিমুখ বীরভূম পেরিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের দিকে। ফলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে পুরুলিয়া, দুর্গাপুর, আসানসোলে। পাশাপাশি অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বীরভূম ও বাঁকুড়াতেও। আজ কলকাতায় বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমতে পারে। তবে দুর্যোগ চলবে আরও দু'দিন। রবিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, নদীয়া ও দুই মেদিনীপুরে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন