লক্ষ্মণ সাঁতরা : হুগলি জেলায় উৎপাদিত সবজি নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে বিদেশের বাজারে। আর এতে উপকৃত হচ্ছেন এলাকার কৃষকেরা। যদিও পাশাপাশি আলুর দাম এবছর সেভাবে না পাওয়ায় চিন্তিত এই জেলার আলু চাষিরা। এব্যাপারে তাঁরা সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
হুগলি জেলা আগাগোড়াই কাঁচা শাকসবজি এবং আলু উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলির তুলনায় অগ্রণী স্থান অধিকার করে আসছে। বর্তমানে এই জেলার ধনিয়াখালি কৃষি খামার থেকে প্রতি মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনিবার লাউ, কুমড়ো, করোলা, চিচিঙ্গা, বরবটি, কচু ইত্যাদি টাটকা সবজি দুবাই, ইতালি, শ্রীলংকা সহ বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন টন সবজি প্যাকিং হয়ে এখান থেকে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এতে সবজি চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকেরা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। তাছাড়া আনুষঙ্গিক প্যাকিং, বাছাই সহ নানা কাজে জড়িত শ্রমিকরাও উপকৃত হচ্ছেন।
তবে এই অঞ্চলের কৃষকদের প্রধান অর্থকরী ফসল আলুর দাম দিন দিন নেমে যাওয়ায় প্রমাদ গুনছেন তাঁরা। এই মরসুমে যখন মাঠ থেকে আলু বাজারে এবং কোল্ড স্টোরেজে যেতে শুরু করেছিল, তখন আলুর দাম ছিল ৪০০–৪৩০ টাকা (৫০ কেজি) প্রতি বস্তা। বর্তমানে সেই আলোর দাম কোল্ড স্টোরেজে ২০০-২২০ টাকা প্রতি বস্তা (৫০ কেজি)। এক বস্তা আলু জমি থেকে হিমঘরে পাঠাতে কম করে ৫০ টাকা খরচ হয়। স্টোর ভাড়া ৮৩ টাকা। এখনও অধিকাংশ কোল্ড স্টোরেজে ৮০ শতাংশ আলু রয়ে গেছে।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের ৪৬৫ টি হিমঘরে আলু রাখার বন্দোবস্ত রয়েছে। এর থেকে সহজেই অনুমান করা যায়, কি বিশাল পরিমাণ আলু এখনও সমস্ত কোল্ড স্টোরেজে মজুত রয়েছে। অথচ যে পরিমাণ সময় হাতে রয়েছে, তাতে ওই বিশাল পরিমাণ আলু সেই সময়ের মধ্যে শেষ হবে না। কারন ৪-৫ মাসের মধ্যেই স্টোরগুলি সামনের মরসুমের জন্য খালি করে দিতে হবে। যে হারে আলুর দাম দিন দিন কমছে, তাতে যেকোনও সময় হিমঘরে আলু নিলামের দিন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এবছর হিমঘরের অধিকাংশ আলুই কৃষকদের। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের কাছেই কৃষকদের অনুরোধ, পাল্লা দিয়ে কৃষকদের জন্য অনুদানের মাত্রা না বাড়িয়ে, আলুর দাম বাড়িয়ে সহযোগিতা করুন। তাঁদের দাবি, ধানিয়াখালির মতো আরও বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচা শাক সব্জির মতো আলুও যাতে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হয়, তার ব্যবস্থা করা হোক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন