সমকালীন প্রতিবেদন : মঙ্গলে সফলভাবেই অভিযান চালাচ্ছে আমেরিকার গবেষণা সংস্থা নাসার মার্স হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি। শনিবার সেটি সফলভাবে দশম উড়ান শেষ করেছে। আগে ন’টি অভিযানে ইনজেনুইটি তার দক্ষতার পরিচয় দিলেও এবারের উড়ান নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। কারণ, তাঁদের ধারণা ছিল, চার-পাঁচবার উড়ানের পরই সেটি ভেঙে পড়বে।
কিন্তু নাসার মহাকাশ গবেষকদের খানিকটা অবাক করেই সফলভাবে একের পর এক উড়ান চালিয়ে যাচ্ছে ইনজেনুইটি। লালগ্রহের বুকে যে সমস্ত উঁচু টিলা বা ছোটখাট ঢিবি কিংবা পাহাড় জাতীয় অংশ রয়েছে, সেইসব পর্যবেক্ষণ করাই ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারের দশম উড়ানের লক্ষ্য ছিল। এমনটাই জানিয়েছিল মার্কিন স্পেস এজেন্সি। তা সফলভাবে করতে পেরেছে সে। প্রতিবার অভিযানেই পারদর্শীতার নিরিখে হেলিকপ্টারটি আগেরবারকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। দেখা গিয়েছে, মঙ্গলের পিঠে নামার পর ইনজেনুইটি ৪০ ফুট উঁচুতে উড়ে পাক খেতে পারছে। প্রাথমিকভাবে নাসার গবেষকরা ভেবেছিলেন, মহাকাশ যানের সঙ্গে ড্রোন পাঠাবেন। কিন্তু পরে ভাবনা বদলে কপ্টার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলগ্রহের মাটি ছুঁয়েছিল নাসার মার্স রোভার পারসিভের্যান্স। এই রোভারের ভিতরেই সুরক্ষিত অবস্থায় ছিল মার্স হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি।গত ১৯ এপ্রিল প্রথমবারের জন্য উড়েছিল এই হেলিকপ্টার। সেই প্রথম পৃথিবীর বাইরে এ জাতীয় কোনও কপ্টার পাঠানো হয়। অনেকটা ড্রোনের মতোই মঙ্গল গ্রহে কাজ করছে এই কপ্টার। ছবি তুলছে লাল গ্রহের পৃষ্ঠদেশের। যে তথ্য নাসার মার্স হেলিকপ্টার নিয়ে আসবে সেইসব গবেষণা করে নিঃসন্দেহে নতুন দিগন্তের আবিষ্কার হবে, এমনটাই আশা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের।
নাসার মঙ্গলযান পারসেভারেন্সের সঙ্গে হেলিকপ্টার ইনজেনুইটিকে পাঠানোর বিষয়টিকে অনেকেই সহজভাবে নেননি। তাঁরা ভেবেছিলেন, পারসেভারেন্স সফল হলেও ইনজেনুইটি হয়তো নাসাকে হতাশ করবে। কিন্তু এই হেলিকপ্টার এখন তার সর্বোচ্চ সক্ষমতা দেখাচ্ছে। ভিনগ্রহে মানুষের ওড়ানো প্রথম উড়োযান এটি। শুধু তা–ই নয়, মঙ্গলের কম ঘনত্বের বায়ুমণ্ডলে হেলিকপ্টারটি বেশ দ্রুতগতিতে উড়তে পারছে। নতুন উচ্চতায় ওড়ার রেকর্ডও গড়ছে ইনজেনুইটি।
নাসা জানায়, এবার শুধু পারসেভারেন্সের উপর ওড়াওড়ি না করে বালিপথে অঞ্চলের সংক্ষিপ্ত পথ বেছে নেয় ইনজেনুইটি। এই পথে উড়তে গিয়ে হেলিকপ্টারটি দূরত্ব, ওড়ার সময় ও গতির রেকর্ড ভেঙেছে। ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারটি প্রতি সেকেন্ডে ১৬ ফুট (৫ মিটার) গতিতে ১৬৬ দশমিক ৪ সেকেন্ড উড়তে সক্ষম হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সে এক মাইলের বেশি পথ উড়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন