সমকালীন প্রতিবেদন : উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া এলাকার শিল্পীর তৈরি সপরিবার মা দুর্গা পাড়ি দেবে সুদূর থাইল্যান্ডে। সঙ্গে বেশ কিছু গনেশ মূর্তিও। সেখানকার বিভিন্ন এলাকায় এই মূর্তি পূজিত হবে। অন্যান্যবার যেখানে সশরীরে সেদেশে উপস্থিত হয়ে হাবড়ার শিল্পী মূর্তি গড়ে দিয়ে আসেন, সেখানে এবছর হাবড়ায় মূর্তি তৈরি হয়ে তা জলপথে পাড়ি দেবে থাইল্যান্ড। এখন তারই প্রস্তুতি চলছে।
করোনার জেরে বিদেশযাত্রা বন্ধ। খুব প্রয়োজনে কাউকে কোথাও যেতে হলেও মানতে হচ্ছে একাধিক বিধিনিষেধ। কিন্তু সে নিয়ম তো মানুষের জন্য! দেবদেবীদের বিদেশযাত্রায় ছাড় আছে। তবে সেক্ষেত্রেও জুড়েছে কিছু অতিরিক্ত ঝক্কি। এই পরিস্থিতিতে এবার বাক্সবন্দি হয়ে জলপথে থাইল্যান্ড পাড়ি দিতে চলেছে হাবড়ার মৃৎশিল্পী পরিমল পালের তৈরি সপরিবার দুর্গা ও বেশকিছু গণেশ। পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য থাইল্যান্ড থেকে এবার অতিরিক্ত আরও ২৪টি গণেশমূর্তির সঙ্গে একটি দূর্গা মূর্তিরও বরাত পেয়েছেন তিনি। সব মূর্তি জাহাজে চাপিয়ে যথা সময়ে সাগরপারের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পরিমলবাবুর এক চিলতে স্টুডিওয় এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা।
শিল্পী পরিমলবাবুর বাড়ি হাবড়ার পৃথিবা গ্রাম পঞ্চায়েতের বানীপুর আমবাগান টালিরভাটা এলাকায়। তিনি জানান, ২০১৩ সাল থেকে তিনি থাইল্যান্ডের বিষ্ণুমন্দিরের জন্য দুর্গাপ্রতিমা গড়ে আসছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুজো উদ্যোক্তারাই পাঠিয়ে দিতেন তাঁর বিমানযাত্রার টিকিট ও আনুসঙ্গিক খরচপাতি। থাইল্যান্ডে গিয়ে সেখানে মণ্ডপেই গড়তেন প্রায় ১২ ফুট উচ্চতার দুর্গাপ্রতিমা। মৃন্ময়ী মায়ের রূপ দেখে ধন্য ধন্য করতেন প্রবাসীরা। এমনটাই হয়ে আসছিল ২০১৩ থেকে। গঙ্গার মাটি, জল, বিচুলি, বাঁশে ধাপে ধাপে রূপ পাচ্ছে প্রতিমা। থার্মোকল, চুমকিতে তৈরি হচ্ছে মায়ের সাজ। কথায় কথায় পরিমলবাবু জানান, থাইল্যান্ডেও দিনে দিনে গণেশ পুজোর প্রচলন বাড়ছে। এই প্রবণতা তো আমাদের এখানেও দেখা যাচ্ছে। তাই এবার তিনি সব মিলিয়ে ২৪ টি গণেশ মূর্তি ও একটি সপরিবারে দূর্গা মূর্তি পাঠাচ্ছেন সেখানে। এক ফুট থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত নানা উচ্চতার ২৪ টি গণেশমূর্তি গড়ছেন তিনি। সেগুলি কাঠের বাক্স বানিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত করে ফেলেছেন থাইল্যান্ডের যাওয়ার জন্য। আগামী ৩০ জুলাই সব মূর্তি ভালোভাবে বাক্সবন্দি করে থাইল্যান্ডগামী জাহাজে তুলে দেওয়া হবে। হারড়ার পরিমল পালের হাতে তৈরি এইসব প্রতিমা বিষ্ণমন্দিরের পাশাপাশি পুঁজিত হবে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন