Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১

মশা কি মানুষ চিনে কামড়ায় ? জানেন কি বলছেন বিজ্ঞানীরা !

 

মশা কি মানুষ চিনে কামড়ায় ? জানেন কি বলছেন বিজ্ঞানীরা !

সমকালীন প্রতিবেদন : ধরা যাক, বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে একসঙ্গে বসে গল্পগুজব করছেন। কিন্তু মশা শুধু আপনাকেই সূঁচ ফুটিয়ে চলেছে। মশার কামড় খেয়ে আপনার সারা শরীর চাকা চাকা হয়ে ফুলে উঠছে। জ্বালা করছে। দু'হাতে মশা তাড়িয়ে পারছেন না। আপনি কখনো আবার অতিষ্ট হয়ে মশা মারতে গিয়ে নিজের গালেই বসিয়ে দিচ্ছেন সজোরে থাপ্পড়। কিন্তু একবারও ভেবে দেখেছেন কি, একসঙ্গে সবাই মিলে বসে থাকা সত্ত্বেও মশা কেন আপনাকেই শুধু কামড়াচ্ছে। এর কি কোনো নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে ? বিজ্ঞানীরা বলছেন, আলবাত রয়েছে। মশা আসলে মানুষ চিনে কামড়ায়। বিষয়টি ঠিক কীরকম। 

টাইম জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, রক্তের গ্রুপ দেখে মশা সেই ব্যক্তির শরীরে কামড় বসায়। 'ও' গ্রুপের রক্ত যাদের, মশার কামড়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তাদের সবচেয়ে বেশি। তা সে ও পজিটিভ বা  ও নেগেটিভ, যাই হোক না কেন। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতঙ্গবিদ তথা মশা বিশেষজ্ঞ ডা: জোনাথন ডে'র মতে, এ কিংবা বি  গ্রুপের তুলনায় ও গ্রুপের রক্ত মশাকে অনেক বেশি আকৃষ্ট করে। শুধু তাই নয়, কার শরীর থেকে কী পরিমাণ ল্যাকটিক অ্যাসিড ও রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে, মশা কাকে বেশি কামড়াবে কিংবা কাকে কম কামড়াবে। 

গবেষণা বলছে, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং যাদের অতিরিক্ত ওজন, মশা তাদের বেশি কামড়ায়। এছাড়াও কিছু গাঢ় রং রয়েছে, যেগুলির প্রতি মশা বেশিমাত্রায় আকৃষ্ট হয়। ফলে ওইসব রঙের জামাকাপড় পরলে মশার কামড় খাওয়ার আশংকা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। কাদের মশা বেশি কামড়ায়, কাদের কম কামড়ায়, এ নিয়ে নানা গবেষণা চলছে দেশবিদেশে। একদল বিজ্ঞানী বলছেন, যে সমস্ত মানুষ বেশি মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করেন, মশা তাদেরকে বেশি কামড়ায়। আর সেকারণেই দেখা যায়, শিশুদের তুলনায় মশার কামড়ে বেশি আক্রান্ত হন বড়রা। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের মশা বেশি কামড়ানোর কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছেন, ওই সময় সংশ্লিষ্ট মহিলা ২১ শতাংশ বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়েন। এছাড়া তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা ১.২৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বেশি থাকে, যা মশাদের আকৃষ্ট করে বেশিমাত্রায়। 

বিজ্ঞানীদের দাবি, মানুষের শরীরের ত্বকে প্রায় ৪০০ প্রকারের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এদের ধরন ও মাত্রার উপর মশা কামড়ানো নির্ভর করে। অনেকে বেশি ঘামেন। ঘামের সঙ্গে মিশ্রিত ল্যাকটিক অ্যাসিড মশাদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। দেখা গিয়েছে, ৮৫ শতাংশ মানুষ ত্বকের মাধ্যমে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক নির্গত করে থাকেন। বাকি ১৫ শতাংশ মানুষ তা করেন না। এই তারতম্যের কারণেই কাউকে মশা বেশি কামড়ায়, কাউকে কম কামড়ায়। এছাড়াও কিছু জিনগত কারণ রয়েছে, যার ফলে কারও কারও প্রতি মশা বেশি আকৃষ্ট হয়। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী সম্প্রতি মশা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চালিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, যেসব মানুষের শরীরে মশার প্রিয় রাসায়নিকের মাত্রা বেশি, তাঁদেরকেই মশা বেশি করে কামড়ায়। এছাড়াও যারা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তারাও বেশি মাত্রায় মশার কামড়ের শিকার হন। তবে নেপথ্য কারণ যাই হোক না কেন, চিকিৎসকরা বলছেন, সবসময় বিশেষ করে এই বর্ষাকালে মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। কারণ, মশার কামড় থেকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকনগুনিয়া, টাইফয়েড সহ নানা ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। তাই কোনওভাবেই যেন মশা শরীরে কামড় বসাতে না পারে, সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। পাশাপাশি, জমা জল সহ যে সমস্ত জায়গায় মশা বংশবিস্তার করে, সেগুলিও সমূলে বিনষ্ট করতে হবে। তবেই মিলবে পরিত্রাণ।

২টি মন্তব্য: