Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

রেলকলোনীর শিশুদের নিয়ে বিনা পয়সার পাঠশালা কলেজ পড়ুয়াদের

 

রেলকলোনীর শিশুদের নিয়ে বিনা পয়সার পাঠশালা কলেজ পড়ুয়াদের

সমকালীন প্রতিবেদন :‌ করোনা আর লকডাউন জীবনের দৃষ্টিভঙ্গিই বদলে দিয়েছে কথিকা ঘোষ, পার্থ রায়, রুদ্রনীল সরকার, স্বাগতা বিশ্বাসদের। এঁরা প্রত্যেকেই এখনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। কিন্তু এই সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তাঁরা ইতিমধ্যেই সামাজিক কাজে ব্রতী হয়েছেন। নিজেদের ছোট্ট পরিসরের মধ্যে থেকে দরিদ্র পরিবারের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য খুলে ফেলেছেন বিনা পয়সার পাঠশালা।

রেলকলোনীর শিশুদের নিয়ে বিনা পয়সার পাঠশালা কলেজ পড়ুয়াদের

বনগাঁ রেল স্টেশন লাগোয়া রেলপাড়ের কলোনী এলাকায় বসবাস শতাধিক পরিবারের। এই পরিবারগুলির অধিকাংশই পঁুথিগত শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। দুবেলা দুমুঠো খাবারের জোগাড় করতে তাঁদের অনেককে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হয়। ইচ্ছে না থাকলেও জীবন বাঁচাতে অনেককে ঘুরপথে অসামাজিক কাজের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে হয়। তাদের জীবন একভাবে কেটে গেলেও তারাও চান যে, তাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার গন্ডিতে আসুক। তাই যেভাবেই হোক তাদের অধিকাংশই সরকারি সহায়তায় নিজেদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু করোনা এবং তার সঙ্গে লকডাউন এইসব খুদে পড়ুয়াদের গৃহবন্দি করে দিয়েছে। মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত পরিবারের পড়ুয়াদের মোবাইলে কিম্বা ল্যাপটপে অনলাইন পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও, রেল কলোনীর এইসব বাচ্চাদের পড়াশোনা এই পরিস্থিতিতে একপ্রকার বন্ধই হয়ে যায়। 

আর এই অবস্থার কথা জানতে পেরেই এগিয়ে আসেন কথিকাদের মতো একঝাঁক তরুন–তরুণী। গড়ে তোলেন 'রাইজিং ইয়ং স্টার।' ‌এই ব্যানারে তাঁরা প্রায় ১৫ জন মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেল কলোনীর এই বাচ্চাদের পড়ানোর উদ্যোগ নেন। গত বছরের আগস্ট মাসে মাত্র ১২ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শুরু হয় তাঁদের এই যাত্রা। রেলপাড়ের একটি শিব মন্দিরের চাতালই হয়ে ওঠে তাদের পাঠশালার স্থান। সেখানে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শতাধিক পড়ুয়া এখন নিয়মিত পাঠ নিচ্ছে। নিজেদের পড়াশোনার ফাঁকে আপাতত সপ্তাহে দুদিন করে খুদে পড়ুয়াদের পাঠদান করছেন তাঁরা। কখনও কখনও পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে ডেকেও আনতে হয়। পড়ানোর পাশাপাশি নিজেদের হাত খরচ বাঁচিয়ে এইসব দরিদ্র পড়ুয়াদের জন্য পড়াশোনার সামগ্রীও কিনে দেন তাঁরা। 

কথিকা ঘোষেরা জানালেন, 'পিছিয়ে পরা সমাজের এই দরিদ্র বাচ্চাদের পুঁথিগত বিদ্যাদানের পাশাপাশি আমরা তাদের সুস্থ সামাজিক চিন্তায় নতুন আঙ্গিকে শিক্ষিত করতে চাই।' শুধু ছোটদেরই‌ নয়, তাদের পরিবারের বড়দেরও বিশেষ পাঠদানের উদ্যোগ নিয়েছেন এই রাইজিং ইয়ং স্টারেরা। তাঁদের এই উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন রেলপাড়ের তথাকথিত 'অশিক্ষিত', 'অর্ধশিক্ষিত' অভিভাবকেরা।‌‌‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন