সমকালীন প্রতিবেদন : নানা মানুষের নানা শখ। আর এই শখের লম্বা তালিকার মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় রঙিন মাছ পোষা। তথ্য বলছে, গোটা বিশ্বে জনপ্রিয়তার নিরিখে ফোটোগ্রাফির পরই রয়েছে রঙিন মাছ পালনের নেশা। চিকিৎসক থেকে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যাকোয়ারিয়ামে রঙিন মাছেদের পাখনা মেলে খেলে বেড়ানোর দৃশ্য অবসাদ কাটাতে সাহায্য করে। কমায় উচ্চ রক্তচাপ।
বর্তমানে ২৮৮ ধরনের রঙিন মাছ আমাদের দেশে জনপ্রিয়। এর মধ্যে ২৬১ প্রজাতির মাছ ডিম পাড়ে। ২৭ প্রজাতির মাছ সরাসরি বাচ্চা দেয়। এক-একটি মাছের স্বভাব চরিত্র এক-একরকম। কেউ একা থাকতে ভালোবাসে। কারও আবার সঙ্গী হারালে মনখারাপ করতে করতে মারা যায়। শুধু যে শখ কিংবা ঘরের শোভা বর্ধনকারী তা নয়। রঙিন মাছকে কেন্দ্র করে পৃথিবী জুড়ে চলছে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য।
প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগের কথা। শখের বশে মাছ পোষা প্রথম শুরু করেছিল সুমেরিয়ানরা। তবে গোড়ার দিকে মাছ পোষার তালিকায় রয়েছে মিশরীয়রাও। জাপানেও বহু বছর আগে শুরু হয় শখের মাছ পালন। রোমান সাম্রাজ্যের রাজারা অতিথিদের ঘরে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মার্বেল পাথরের তৈরি বড় পাত্রে সাগরের বার্বেল মাছ রাখতেন। চীনের সম্রাট হংউ ঘর সাজাতে গিয়ে গোল্ডফিশের প্রেমে মজেছিলেন। প্রাচীন ইরাকেও ঘরে মাছ পোষার চল ছিল। প্রায় হাজার বছর ধরে চীন ও জাপানে ঘর সাজানোর অঙ্গ হিসেবে গোল্ডফিশ ও কই কার্প বাহারি মাছ খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
কত রকমের মাছ। এই যেমন ধরা যাক, ব্ল্যাক মলি। দেখতে কালো। কিন্তু তাতে কী। অত্যন্ত প্রিয়। সব সময়ই সাঁতার কাটতে থাকে। দল বেঁধে থাকে। অন্যদের সঙ্গে থাকতে তেমন একটা আপত্তি নেই। এমনিতে শান্ত স্বভাবের। কিন্তু বাচ্চা হওয়ার পর খুব ক্ষুধার্ত থাকে। খিদের চোটে অনেক সময় নিজের বাচ্চাদেরও খেয়ে নেয়। মলির মতোই চলনবলন গাপ্পির। এটি মূলত ভেনেজুয়েলা, ব্রাজিলের মাছ। বিচিত্র রং। চোখগুলো একটু বড়। ঠোঁটটা উপরের দিকে ওঠা। মেয়েদের চেয়ে পুরুষের বাহার বেশি। সাইজেও একটু বড়।
মেক্সিকোর মাছ সোর্ডটেল। ধরা হয়, মধ্য আমেরিকার গুয়াতেমালা এদের স্বদেশ। চেহারায় বেশ হৃষ্টপুষ্ট। নানা রঙের হয়। তবে চোখ টানে সবুজ ও লালের মিশ্রণ। পুরুষের লেজটা অনেকটা তলোয়ারের মতো। দলবেঁধে থাকতে একটু বেশি পছন্দ করে। প্লেটির আদি বাড়িও মেক্সিকো। হলুদ রঙেরই বেশি দেখা যায়। ঝগড়াঝাটি, অশান্তি একদম না-পসন্দ অ্যাঞ্জেলের। জীবন্ত খাবারটাই প্রিয়। অন্য মাছের সঙ্গে থাকতে আপত্তি নেই। তবে নিজেদের জুটিতে থাকতেই বেশি পছন্দ করে।(পরবর্তী অংশ আগামীকাল)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন