সমকালীন প্রতিবেদন : বনগাঁ পুরসভা এলাকায় দুয়ারে ভ্যাকসিন কর্মসূচির এক মাস পূর্ণ হলো. আর এই এক মাসে পুরসভা এলাকার অর্ধেকেরও বেশি বয়স্ক এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন বলে দাবি পুরসভার। এটা তাদের কাছে বড় সাফল্য বলে তারা মনে করছেন।
করোনার ভ্যাকসিন নেওয়া নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভোররাত থেকে ব্যাপক লাইন পরার দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে। এই পরিস্থিতিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন নেওয়া বয়স্ক মানুষ এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে পড়ে। অথচ বয়স্ক মানুষদেরই আগে ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেন যে, বয়স্ক মানুষ এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের বাড়ি পৌঁছে গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় 'দুয়ারে ভ্যাকসিন'। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বনগাঁ পুর এলাকায় গত ২৩ জুন থেকে শুরু হয় দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পের কাজ। প্রথম দিন এই প্রকল্পের সূচনা করেন বনগাঁ পুরসভার বর্তমান প্রশাসক গোপাল শেঠ। এই প্রকল্প চালু হওয়ায় জনমানসে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়।
পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বনগাঁ পুরসভার যে ২২ টি ওয়ার্ড রয়েছে, সেখানে কর্মরত পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মহিলা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বয়স্ক মানুষ এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের প্রথমে তালিকা তৈরি করে নিয়ে আসছেন। এরপর প্রতিদিন একটি বা দুটি ওয়ার্ডে গিয়ে সেই সব মানুষদের বাড়িতে পৌঁছে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ টি বাড়ি ভিজিট করে এই নামের তালিকা তুলে আনা হচ্ছে। পাশাপাশি কমপক্ষে প্রতিদিন ৫০ জনের বাড়িতে পৌঁছে গিয়ে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী গত এক মাসে ১২২০ জনকে দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পের মাধ্যমে টিকাকরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন বনগাঁর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান, খেলোয়াড় সহ বিভিন্ন জগতের বয়স্ক মানুষেরা।
এ ব্যাপারে বনগাঁ পুরসভার বর্তমান প্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, দুয়ারে সরকারের মতো দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পের মাধ্যমে মমতা ব্যানার্জি আরও বেসি করে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন। এই প্রকল্প তারই বড় প্রমাণ। আমরা তাঁর সৈনিক হিসেবে তাঁর সরকারের ইচ্ছে, সরকারের লক্ষ্যকে সাফল্যের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। বয়স্ক এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা যে অসহায় নয়, ভ্যাকসিন পাবার পর তাঁদের মুখের অভিব্যক্তি দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে। আর তাতেই আমাদের আনন্দ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই বনগাঁ পুরসভা এলাকার ৫০ শতাংশেরও বেশি বয়স্ক এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষকে টিকাকরণের প্রথম ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তর মনে করছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন